বাংলাদেশ ডেস্ক | বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
ওমানের পর বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বন্ধ হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, যেসব কর্মী এর মধ্যে ভিসা পেয়েছেন বা পাবেন, তাঁদের আগামী ৩১ মের মধ্যে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে হবে। এরপর বাংলাদেশ থেকে আর কোনো কর্মী মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে পারবেন না। কর্মীদের জন্য ভিসার আবেদনের সর্বশেষ সময় ৩১ মার্চ।
মন্ত্রণালয় ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কাজ করতে যাওয়া বেশির ভাগ শ্রমিক প্রতারণার শিকার হয়েছেন। মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও কাজ মেলেনি। এ ছাড়া নানা ধরনের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কর্মীরা। সেখানকার নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। গত ২০ মার্চ এসংক্রান্ত বাংলাদেশ সরকার বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হয় বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এর আগে গত ৩১ অক্টোবর একই ধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে বন্ধ হয়েছে ওমানের শ্রমবাজার।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, ওমানের পর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে গেলে বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে পড়বে জনশক্তি খাত।
এই ক্ষতি থেকে উদ্ধার পেতে হলে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।
তবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, আলোচনার মধ্য দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। এর মধ্যে সে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
কর্মীদের অশেষ ভোগান্তি
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশি কর্মীদের নতুন করে অনুমোদন না দিলেও তাঁদের দুর্ভোগ থেমে নেই। গত বছরের ডিসেম্বরে নির্মাণকাজের কর্মীর ভিসায় মালয়েশিয়া যান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম।
এখনো কোনো কাজ পাননি তিনি।
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের তিন মাস ধরে কোনো কাজ দিচ্ছে না। খাবারও ঠিকমতো দিচ্ছে না। আমাদের বাঁচান। আমাদের মতো এমন হাজার হাজার মানুষ ভুগছে। হয় আমাদের কাজ দেন, নয়তো আমাদের দেশে ফিরিয়ে নেন।’
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশটিতে দেড় থেকে দুই লাখ বাংলাদেশি কর্মী বেকার ও মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অনেকে নিয়মিত দূতাবাসের সহায়তা চাচ্ছেন। কর্মকর্তাদের মতে, নিয়োগকারী সংস্থাগুলোর সিন্ডিকেটের কারণেই কর্মীদের জন্য এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলেন, একজন কর্মী ৮০ হাজার টাকায় মালয়েশিয়ায় আসার কথা থাকলেও সাড়ে চার লাখের কমে কেউ আসতে পারেননি। আন্দোলন করেও সিন্ডিকেট থামানো যায়নি। অনিয়মের কারণে বন্ধ হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, আগামী ১ জুন থেকে শুধু বাংলাদেশ নয়, অন্যান্য দেশ থেকেও কোনো কর্মী মালয়েশিয়ায় কাজ করতে যেতে পারবে না।
এ বিষয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (কর্মসংস্থান) গাজী মো, শাহেদ আনোয়ার বলেন, ‘এখন আমাদের কাছে যেসব চাহিদা অনুমোদন রয়েছে, সেসব চাহিদা অনুযায়ী সময়মতো সব কর্মী পাঠানোর কাজ করছি। এখন আমরা দুই দেশের মধ্যে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা করছি। যদি তারা এ বিষয় রাজি হয়, তাহলে একটা সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
Posted ৪:০১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh